সোহাগ মিয়া, (মাধবপুর) হবিগঞ্জ প্রতিনিধি
হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার ১০ নং ছাতিয়াইন ইউনিয়নের এক্তিয়ারপুর গ্রামের দুবাই প্রবাসী শামসুল হকের ছেলে আতিকুল ইসলাম মিশু (১৭),মাধবপুর মৌলানা আসাদ আলী ডিগ্রি কলেজের ১ম বর্ষের ছাত্র।
০৩/১১/২০২২ ইংরেজি দিবাগত রাতে ছাতিয়াইন এলাকার ওয়াজ মাহফিল থেকে বাড়ি ফেরার পথে পূর্ব পরিকল্পনামত উৎ পেতে থাকা একদল সন্ত্রাসীর ছুড়িকাঘাতে নিহত হয়।
পুলিশ ও স্হানীয় সুত্র মতে, এক্তিয়ারপুর গ্রামের সেলিম মিয়ার ছেলে তারেক মিয়া (১৭) এর সাথে একই গ্রামের,আহম্মদ মিয়ার মেয়ের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। অপরদিকে বাঘাসুরা ইউনিয়নের হরিতলা গ্রামের মেস্তুর বাড়ির শফিক মিয়ার ছেলে ঘাতক শিমুল মিয়া (২২) ও-ই কিশোরীকে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে ব্যার্থ হলে, ঘাতক শিমুল আহত তারেকের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে বৃহঃবার দিবাগত রাতে ছাতিয়াইন এর ওয়াজ মাহফিল থেকে বাড়ি ফেরার পথে পূর্ব পরিকল্পিত ভাবে ওতপেতে থাকা দলবল নিয়ে তারেকের উপর আক্রমণ করে। তারেকের পায়ের রগ কেটে দেয়।
মিশু তারেক কে বাচাতে গেলে তারা মিশুকে ছুড়ি দিয়ে পেটে পুচ দিলে মিশু মাটিতে লুটিয়ে পড়ে।
খবর পেয়ে এলাকাবাসী আনুমানিক রাত ৩’০ টায় আতিকুল ইসলাম মিশু ও তারেক কে হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যায়। চিকিৎসারত অবস্থায় ০৪/১১/২০২২ ভোরে মিশু মারা যায় এবং তারেক কে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করে।
শনিবার দুপুর ২’০ টায় নিহত মিশুর নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত ও দাফনের পর আনুমানিক বিকেল ৪’০ টার সময় ঢাকা-সিলেট মহাসড়ককের শাহপুর নামক স্থানে এক মানববন্ধন করে সংশ্লিষ্ট এলাকাবাসী।
হত্যার সাথে কে কে জড়িত এ ব্যাপারে জানতে চাইলে আতিকুল ইসলাম মিশু ও তারেকের সাথে থাকা (ওয়াজ মাহফিল থেকে আসার সময়) বন্ধু রিয়াজ,অন্তর,সাজু সাইফুল, সোহাগ , কে জিজ্ঞেস করলে তারা প্রতিবেদককে বলে, হরিতলা মেস্তুর বাড়ির ঘাতক শিমুল মিয়া সহ আরো অনেকেই এ ঘটনার সাথে জড়িত, মুখে মাস্ক থাকায় তাদের চিনতে পারিনি।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে মিশুর মা বলেন, আমার ছেলে মৃত্যুর আগে আমাকে ঘাতক শিমুলের কথা বলে এবং শিমুলের বিচার আমার নিজের হাতে করতে বলে।
মিশু হত্যার সাথে কারা জড়িত থাকতে পারে জানতে চাইলে একই গ্রামের রুক্কু মিয়া ও ছাতিয়াইন হাইস্কুলের শিক্ষক ফজলু মিয়া জানান, হরিতলা মেস্তুর বাড়ির একটা সন্ত্রাসী দল আছে যা এলাকার সবাই চিনে, তাদের নেতৃত্বে এ কাজ হয়েছে।
মিশু হত্যার বিষয়ে জানতে চাইলে নিহত মিশুর চাচা জিয়াউর রহমান প্রতিবেদককে বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণ মানববন্ধন কর্মসূচি দিয়েছি। কারন আমরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। আমরা চাই প্রশাসনের মাধ্যমে অপরাধীদের সামনে আনা হোক। তবে হরিতলা গ্রামের মেস্তুর বাড়ির সন্ত্রাসী গ্রুপ সম্পর্কে এলাকাবাসী সহ আইন প্রয়োগকারী সংস্থা জানে, তারা ইয়াবা সহ বিভিন্ন অপকর্মে জড়িত। রাতের আধারে কারা রাস্তায় ডাকাতি করে তাদের ধরলেই আমি মনে করি হত্যাকাণ্ডের নেতৃত্ব দানকারী প্রকৃত অপরাধী বেড়িয়ে আসবে। তাছাড়া ঘাতক যে ই হোক তাকে আইনের আওতায় এনে ফাসির ফাসি দেওয়ার দাবী জানাই।
মিশু হত্যার বিচারের দাবিতে মানববন্ধনে অন্যান্যদের মাঝে খান্দুরা হাবেলির জুবায়ের কামাল পীর সাহেব সহ স্হানীয় মেম্বার,ও এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
এ নিউজ সংবাদ লিখা পর্যন্ত কোন মামলা দায়ের করে নি। মামলার প্রস্তুতি চলছে।