ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং এর প্রভাবে চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ের সাগরে থাকা ড্রেজার ডুবে ৮ শ্রমিক নিখোঁজ হয়েছেন। সোমবার (২৪ অক্টোবর) রাত ১০ টার দিকে ড্রেজারডুবির ঘটনা ঘটে। এখনো সন্ধান মেলেনি। উপজেলার সাহেরখালি ইউনিয়নের বসুন্ধরা এলাকায় বেড়িবাঁধ থেকে ১ হাজার ফুট দূরে সাগরের মাঝে ড্রেজার মেশিনটি রাখা ছিলো। মিরসরাই ফায়ার সার্ভিস এন্ড সিভিল ডিফেন্স কর্মীরা মঙ্গলবার সকাল থেকে উদ্ধার কাজ চালাচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঘুর্ণিঝড় সিত্রাং এর প্রাকৃতিক দুর্যোগের প্রভাবে সাগরের জোয়ারের পানির উচ্চতা বৃদ্ধির পাশাপাশি ঝড়ো হাওয়ায় ওই স্থানে রাখা বালু উত্তোলনের ড্রেজার মেশিন সৈকত-২ পানিতে ভেসে গিয়ে ডুবে যায়। ড্রেজারে অবস্থানরত শ্রমিক শাহীন মোল্লা (৩৮), ড্রেজার চালক ইমাম মোল্লা (৩২), মাহমুদ মোল্লা (৩২), আলামিন (২১), তারেক, আবুল বশর (৪৫) ও আরো অজ্ঞাত দুইজন নিখোঁজ হন। সকল শ্রমিকের বাড়ি পটুয়াখালী জেলার জৈনকাঠি মোল্লাবাড়ি থানায়।
বালু উত্তোলনের কাজে নিয়োজিত ড্রেজারে থাকা শ্রমিক আব্দুস সালাম বলেন, ড্রেজারে আমিসহ ৯ জন শ্রমিক ছিলাম। প্রাকৃতিক দুর্যোগের কথা শুনে সন্ধ্যা ৭টার দিকে আমি ড্রেজার থেকে নেমে নিরাপদ স্থানে চলে আসি। বাকিরা ড্রেজারেই অবস্থান করছিলেন।
ড্রেজার ম্যানেজার রেজাউল করিম জানান, ঘটনাস্থলে আরো ৬টি ড্রেজার রাখা ছিল। সতর্কতা সংকেত পেয়ে অপরাপর সকল শ্রমিক নিরাপদ স্থানে চলে গেলেও ঐ ড্রেজারের ৮ শ্রমিক আসেনি। তিনি আরো জানান, ড্রেজারের বালু উত্তোলনকারী শ্রমিকরা দিন-রাত ড্রেজারে অবস্থান করে থাকে। সেখানে খাওয়া-দাওয়া ও ঘুমেরও ব্যবস্থা রয়েছে। বালু উত্তোলনকারীদের ড্রেজার ম্যানেজার ও সংশ্লিষ্ট শ্রমিক লোকজন দাবি, প্রাকৃতিক দুর্যোগের প্রভাবে আকস্মিকভাবে ড্রেজারটি ডুবে যায়।
খবর পেয়ে মিরসরাই থানা পুলিশের একটি টিম রাত ১২ টা থেকে ঘটনাস্থলে অবস্থান করে। মিরসরাই থানার অফিসার ইনচার্জ মো. কবির হোসেন বলেন, সাগরে ড্রেজারসহ ৮ শ্রমিক নিখোঁজের খবর পেয়ে একটি টিম নিয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যায়। সংশ্লিষ্ট কোস্ট গার্ড কমান্ডারকে বিষয়টি মোবাইলে অবগত করে তাদের কোন সহযোগিতা পাওয়া যায়নি। পরে ফায়ার সার্ভিসকে বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে।
সাহেরখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কামরুল হায়দার চৌধুরী বলেন, আমার ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডে বালু উত্তোলন কাজে নিয়োজত একটি ড্রেজার ৮ শ্রমিকসহ নিখোঁজ হওয়ার বিষয় শুনেছি। সোমবার বিকেলে ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে সবাইকে সতর্ক অবস্থানে চলে যেতে মাইকিং করা হয়েছে। তারপরও তারা কেন নিরাপদ আশ্রয়ে গেলো না বুঝতে পারছিনা।
এ বিষয়ে মীরসরাই ফায়ার সার্ভিস এন্ড সিভিল ডিফেন্স স্টেশনের কর্মকর্তা ইমাম হোসেন পাটোয়ারি বলেন, খবর পেয়ে মঙ্গলবার সকাল আমরা ঘটনাস্থলে পৌছে উদ্ধার তৎপরতা অব্যাহত রেখেছি। তবে এখনো পর্যন্ত কাউকে উদ্ধার করা যায়নি।