নিজস্ব প্রতিবেদনঃ
শস্য ভাণ্ডার হিসেবে খ্যাত উত্তরের সীমান্তবর্তী নওগাঁ জেলাতে এ বছর ৩ হাজার ৬২৫ হেক্টর বেশি জমিতে আম চাষ হচ্ছে। গতবারের চেয়ে গাছে ফল ও এসেছে বেশি। তাই দামও বেশি পাওয়ার আশা করছেন বাগান মালিকরা। তবে বাগান মালিকদের দাবি, বিদেশে অধিক পরিমাণে আম রপ্তানি করা গেলে তারা আরও বেশি লাভবান হবেন। এছাড়াও কৃষি বিভাগের কর্মকর্তাদের মতে, এবার নওগাঁতে আম উৎপাদনে সব রেকর্ড ছাড়াতে পারে।
নওগাঁর নিয়ামতপুর উপজেলার চন্দননগর ইউনিয়নের বেনীপুরের তরুণ আম চাষি রুহুল আমিন। তিনি গত ২ বছর আম বাগানের শ্রম দিয়েছেন। তিনি প্রায় ৫ বিঘা জমিতে রূপালী এবং বারি 4 জাতের আম গাছ রোপণ করেছিলেন। এই বছর তার আম বাগানে প্রথম ফল ধরেছে। আমের ফলন দেখে তিনি সাফল্যে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন।
জেলা কৃষিম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ শামসুল ওয়াদুদ জানান, বিগত বছরগুলোতে স্বল্প পরিসরে আম বিদেশে রফতানি হয়েছিল এই জেলা থেকে। কিন্তু এবার আম রফতানির সকল নির্দেশনা মেনে বড় পরিসরে আম বিদেশে রফতানির চিন্তা ভাবনা করা হচ্ছে।
নওগাঁ জেলা কৃষিসম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, গত ২০১৯-২০ অর্থবছরে নওগাঁয় আম বাগান ছিল ২৪ হাজার ৭৭৫ হেক্টর জমিতে। হেক্টরপ্রতি গড় ফলন হয়েছিল ১২ মেট্রিক টন। উৎপাদন হয়েছিল ২ লাখ ৮৫ হাজার ৯০০ মেট্রিক টন আম। যার বিক্রয় মূল্য ছিল প্রায় ১ হাজার ৪৪১ কোটি ৮০ লাখ টাকা। গত ২০২০-২১ মৌসুমে আমবাগান ছিল ২৫ হাজার ৮৫০ হেক্টর জমিতে। হেক্টরপ্রতি গড় ফলন হয়েছিল ১৩ দশমিক ৫০ মেট্রিক টন। উৎপাদন হয়েছিল ৩ লাখ ৪৮ হাজার ৯৭৫ মেট্রিক টন আম। যার বিক্রয় মূল্য ছিল প্রায় ১ হাজার ৫৭০ কোটি ৩৮ লাখ ৭৫ হাজার টাকা।
চলতি মৌসুমে উপজেলা ভিত্তিক আম চাষের পরিমাণ হলো— সদর উপজেলায় ৪৪৫ হেক্টর, রানীনগরে ১১০, আত্রাইয়ে ১২০, বদলগাছীতে ৫২৫, মহাদেবপুরে ৬৮০, পত্নীতলায় ৮ হাজার ৮৬৫, ধামইরহাটে ৬৭৫, সাপাহারে ১০ হাজার, পোরশায় ১০ হাজার ৫২০, মান্দায় ৪০০ ও নিয়ামতপুরে ১ হাজার ১৩৫ হেক্টর জমিতে।
ইতিমধ্যে জেলার আম সংগ্রহ শুরুর তারিখ ঘোষণা করেছেন জেলা প্রশাসন ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ।
গুটি আম ২৫ মে, গোপালভোগ ৩০ মে, খিরসাপাত/হিমসাগর আম ০৫ জুন, নাগ ফজলী আম ০৮ জুন, ল্যাংড়া/ হাঁড়িভাঙ্গা আম ১২ জুন, ফজলী আম ২২ জুন, আমরুপালী আম ২৫ জুন, আশ্বিনা/ বারি ফোর / গৌড়মতি জাতের আম ১০ জুলাই থেকে সংগ্রহ শুরু হবে।