রবিবার, ০৪ জুন ২০২৩, ০৫:৩৭ পূর্বাহ্ন
Logo
শিরোনাম:
সালথায় ৬শ’ ইয়াবাসহ যুবক গ্রেফতার মাটিরাংগা উপজেলায় তাইন্দং টু মাটিরাংগা রাস্তার বেহাল দশা, যান চলাচলে অযোগ্য মাটিরাংগা উপজেলায় তাইন্দং টু মাটিরাংগা রাস্তার বেহাল দশা, যান চলাচলে অযোগ্য মীরসরাইয়ে হেমন্ত সাহিত্য আসরে বাংলার ষড়ঋতুর জয়গান মীরসরাইয়ে হেমন্ত সাহিত্য আসরে বাংলার ষড়ঋতুর জয়গান মীরসরাইয়ে হেমন্ত সাহিত্য আসরে বাংলার ষড়ঋতুর জয়গান কুষ্টিয়ায় ধান খেত থেকে নবজাতকের বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার কুষ্টিয়ায় ধান খেত থেকে নবজাতকের বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার কুষ্টিয়ায় ধান খেত থেকে নবজাতকের বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার তারুণ্য সমাজ কল্যাণ ফাউন্ডেশন এর বর্ষপূর্তি ও সেরা স্বেচ্ছাসেবক সম্মাননা ২০২২ সমপন্ন।

প্রণয়, বিচ্ছেদ এবং পরিণয়

রিপোর্টার
  • পোস্ট করা হয়েছে রবিবার, ৬ নভেম্বর, ২০২২
  • ৪৫ বার পড়া হয়েছে

লেখকঃবখতিয়ার সালমান

বাসায় ফাইনালি জানিয়ে দিলাম ‘আমি বিয়ে করবো।’ সবাই তো অবাক! কোথায় স্টাব্লেশড, কোথায় কি? এভাবে আমাকে মেয়ে দিবে কোন্ হতভাগা? কিন্তু আমি নাছোড়বান্দা। কোনো অজুহাতই শুনবোনা আমি। যেভাবেই হোক বিয়ে আমাকে করাতেই হবে। এটা আমার ফাইনাল সিদ্ধান্ত। হঠাৎ এমন সিদ্ধান্তের কারণ জানতে চাইলো পরিবার। ইশারা ইঙ্গিতে এ ও জানতে চাইলো ‘আমার পছন্দের কেউ আছে কিনা, কিংবা কোন মেয়ে (প্রেমিকা) আমাকে এ সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য করলো কিনা।’ পরিবার, আত্মীয় স্বজন, বন্ধুবান্ধবের এমন ধারণাকে সম্পূর্ণ ভুল প্রমাণ করে আমি পরিষ্কার এটাও জানিয়ে দিয়েছি যে “পাত্রী আমি দেখবোনা। পারিবারের পছন্দই আমার পছন্দ। হোক সেটা চন্দ্রবর্ণ কিংবা কৃষ্ণবর্ণ। পাত্রী দেখার কোন ইচ্ছাই আমার নেই।”

মূলত আমার এ সিদ্ধান্তের পেছনে কারণ হলো ‘শাহানা’। আমার সদ্য ব্রেকাপ হওয়া প্রেমিকা।
যার সাথে চার বছরের রিলেশন ব্রেকাপের বিরহে কাতর আমি। ঠিক যেই মুহুর্তে শাহানার সাথে ব্রেকাপ হয় তখনই পাহাড়সম আবেগ মাথায় নিয়ে চোখের জল মুছতে মুছতে বলে দিয়েছি ওকে “দ্বিতীয় কারো সাথে রিলেশনে জড়াবোনা আমি। তুমিই আমার প্রথম, তুমিই শেষ। হয়তো তোমার কাছে আমি তা নয় এবং ছিলামনা। তবুও ভাল থেকো তুমি। অনেক শুভকামনা”।

একথা বলার পর নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে আমি বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নিই। মায়ের আচরণ দেখে মনে হচ্ছে, ‘মা আমার বিষণ্ণতার কারণ বুঝতে পেরেছে।’ কানে হেডফোন লাগিয়ে অলওয়েজ গান শুনা, কাজকর্মে পড়াশুনায় মন না দেওয়া, খাওয়া-দাওয়ায় অনিহা এসব দেখার পর পেছনের কারণ বুঝতে পারেনা এমন মা পৃথিবীর কোথাও আছে বলে আমার মনে হয় না।
পরিবার আমার জন্য পাত্রী দেখতে লাগলো। আত্মীয়স্বজন, প্রতিবেশী, বন্ধুবান্ধব সবাই হতবাক এমন এলাহি কাণ্ডে। ফোনের পর ফোন, প্রশ্নের পর প্রশ্ন, জবাব দিয়ে কুল পাচ্ছিনা। ফেসবুকে একবন্ধু আমার ছবি দিয়ে ক্যাপশন দিছে “পাত্রী চাই”। ওখান অন্য এক বন্ধু কমেন্ট করেছে “গ্র‍্যান্ড মাস্তি গ্র‍্যান্ড মাস্তি প্যাঁ প্যাঁ প্যাঁ প্যাঁ প্যাঁ। আমাগো দোস্তর বিয়ে হইব, নতুন একটা ভাবি পাইব।”
শালা আছে গ্র‍্যান্ডমাস্তি আর ভাবি নিয়ে, আমি এদিকে মনির খানের গাণ শুনতে ব্যস্ত। এক পর্যায়ে বিরক্ত হয়ে মোবাইলটাও অফ করে দিয়েছি। রাস্তায় বেরোতে পারছিনা। সবাই বলাবলি করতে লাগলো। প্রতিবেশি এক ব্যাচেলর কাকাও যখন ঠাট্টা করে তখন আমার লজ্জা পাওয়ার কিছুই বাকি থাকেনা আর।
কিন্তু করবোটা কি! শাহানার বিরহের আগুনে আমার ভেতরটা দগ্ধ হচ্ছে দিনদিন। সেই দুঃখের কথা কাকে বুঝায়?
রাস্তায় যেতে না যেতেই দুই বন্ধুর সাথে দেখা,
:- দোস্ত! ঘটনা কি সত্যি?😜

ধ্যাত! শেষমেশ বাইরে বেরোনোটা ও অফ করে দিয়েছি। বিয়েটা না হওয়া পর্যন্ত একঘরে হয়েই থাকি ক’দিন। আবার ভাবছি চিরকুমার থেকে যাবো, এদের জ্বালা আর সহ্য হচ্ছেনা। এখন থেকে যেই অবস্থা শুরু করে দিয়েছে! না জানি বিয়ে যদি করেই ফেলি আরো কত কিছুর না সম্মুখীন হতে হয়।

হঠাৎ মা বললো, ‘পাত্রী আমাদের পছন্দ হয়েছে। তোকে দেখতে চাইলো, আমরা তোর ক’টা ছবি দিয়ে দিয়েছি। ওদেরও পছন্দ হয়েছে। বিয়ের তারিখ কবে দিবো?’
এখন আবার না করবো কিভাবে? মনে হচ্ছে এই মুহূর্তে না করতে গেলে তার প্রতিক্রিয়া ভালো হবে না। কিচ্ছু মাথায় আসছেনা আমার। যেহেতু পাত্রী ঠিক করে ফেলেছে সেহেতু মেনে নিতে বাধ্য হয়েছি।
দিন তারিখ ঠিক করার ব্যাপারটাও আমি স্বেচ্ছায় পরিবারের উপর ছেড়ে দিয়েছি।
এবার মা বিরক্ত হয়ে বললো; আশ্চর্য! বিয়ে করবি তুই, সংসার করবি তুই, সব আমদের ওপর ছেড়ে দিবি কেন?
আমি কোন উত্তর না দিয়ে মুখ ভার করে বসে রইলাম। মা আমাকে পাত্রীর ছবি দেখাতে চাইলো। আমি তাতেও আপত্তি জানিয়ে মা’কে ঝাড়ি দিয়ে বললাম ‘দরকার নেই দেখার। তোমরা যা করো তাতেই সন্তুষ্ট আমি’
মা আমার ঝাড়ি খেয়ে মন খারাপ করলো। চরম রাগ, বিষাদ, বিষণ্ণতা দেখে কিছু বলতেও পারছেনা আমাকে।
পরেরদিন ডেকে বললো, আগামী শুক্রবার বিয়ের তারিখ নির্ধারণ করেছি।
হিসেব করে দেখলাম আরো চারদিন বাকি। ক্যাম্নে কাটাবো এমন কষ্টের দিনগুলো? শাহানাকে ছাড়া আমার প্রতিটা মুহূর্তই যেন এক-একটা বছর। অসহ্য যন্ত্রণার এই সময়গুলো কখন ফুরাবে? জানিনা শাহানা কোথায় আছে? কি করছে? ভালো আছে কিনা? ঠিকমতো খাচ্ছে কিনা? এসব প্রশ্ন আর অতীতের স্মৃতি আমার কষ্টকে চরম পর্যায়ে নিয়ে গেছে। যাইহোক, আর চারটা দিন মাত্র। মনে হচ্ছে বিয়েটা করে ফেললে কিছুটা হলেও স্বস্তি পাবো। নতুন স্ত্রীর মায়া আমার কষ্টকে হালকা করে দিবে। আস্তে আস্তে হয়তো অতীত ভুলেই যাবো।
এরই মধ্যে বাড়ির সবাই আমার বিয়ের আয়োজনে ব্যস্ত। বিয়ের আমেজ ছড়িয়ে পড়েছে সারা বাড়ি জুড়ে। শুধু আমিই কেবল ফোন বন্ধ করে বাড়ির এককোণে বসে বিরহ যাপন করছি। ব্যপারটা এমন “যার বিয়ে তার খোঁজ নেই, পাড়াপড়শির ঘুম নেই।”
যাইহোক, অনেক কষ্টে অতিবাহিত হলো আমার চারটা দিন। আজ আমার বিয়ে। এবার স্বাভাবিক হওয়ার চেষ্টা করতেই হয়। অতীতে যা হয়েছে সবকিছু ভুলে নতুন জীবনে পদার্পণ করার প্রয়াসে।
দীর্ঘ এক সাপ্তাহ পর মোবাইল খুলেছি। ইনবক্সে ডুকতেই আমার হার্টবিট ১০০ পার সেকেন্ড।
শাহানা আমাকে এসএমএস করেছে “দ্যাখো বখতিয়ার! তোমার পরিবার থেকে বিয়ের প্রস্তাব করেছে আমায়। আমার ফ্যামিলি প্রথমে রাজি হয়নি। কিন্তু তোমার ফেমিলি একেবারে নাছোড়বান্দা। আমাকে ওদের লাগবেই। এমতাবস্থায় কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে তোমাকে অনেকবার চেষ্টা করেও ফোনে পাইনি। অবশেষে আমি তোমার হলাম।

লেখকঃ সংবাদকর্মী ও সাহিত্যানুরাগী
ইমেইল- sbbakhtiarkhan@gmail.com

পোস্টটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

প্রণয়, বিচ্ছেদ এবং পরিণয়

রিপোর্টার
  • পোস্ট করা হয়েছে রবিবার, ৬ নভেম্বর, ২০২২
  • ৪৫ বার পড়া হয়েছে

লেখকঃবখতিয়ার সালমান

বাসায় ফাইনালি জানিয়ে দিলাম ‘আমি বিয়ে করবো।’ সবাই তো অবাক! কোথায় স্টাব্লেশড, কোথায় কি? এভাবে আমাকে মেয়ে দিবে কোন্ হতভাগা? কিন্তু আমি নাছোড়বান্দা। কোনো অজুহাতই শুনবোনা আমি। যেভাবেই হোক বিয়ে আমাকে করাতেই হবে। এটা আমার ফাইনাল সিদ্ধান্ত। হঠাৎ এমন সিদ্ধান্তের কারণ জানতে চাইলো পরিবার। ইশারা ইঙ্গিতে এ ও জানতে চাইলো ‘আমার পছন্দের কেউ আছে কিনা, কিংবা কোন মেয়ে (প্রেমিকা) আমাকে এ সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য করলো কিনা।’ পরিবার, আত্মীয় স্বজন, বন্ধুবান্ধবের এমন ধারণাকে সম্পূর্ণ ভুল প্রমাণ করে আমি পরিষ্কার এটাও জানিয়ে দিয়েছি যে “পাত্রী আমি দেখবোনা। পারিবারের পছন্দই আমার পছন্দ। হোক সেটা চন্দ্রবর্ণ কিংবা কৃষ্ণবর্ণ। পাত্রী দেখার কোন ইচ্ছাই আমার নেই।”

মূলত আমার এ সিদ্ধান্তের পেছনে কারণ হলো ‘শাহানা’। আমার সদ্য ব্রেকাপ হওয়া প্রেমিকা।
যার সাথে চার বছরের রিলেশন ব্রেকাপের বিরহে কাতর আমি। ঠিক যেই মুহুর্তে শাহানার সাথে ব্রেকাপ হয় তখনই পাহাড়সম আবেগ মাথায় নিয়ে চোখের জল মুছতে মুছতে বলে দিয়েছি ওকে “দ্বিতীয় কারো সাথে রিলেশনে জড়াবোনা আমি। তুমিই আমার প্রথম, তুমিই শেষ। হয়তো তোমার কাছে আমি তা নয় এবং ছিলামনা। তবুও ভাল থেকো তুমি। অনেক শুভকামনা”।

একথা বলার পর নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে আমি বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নিই। মায়ের আচরণ দেখে মনে হচ্ছে, ‘মা আমার বিষণ্ণতার কারণ বুঝতে পেরেছে।’ কানে হেডফোন লাগিয়ে অলওয়েজ গান শুনা, কাজকর্মে পড়াশুনায় মন না দেওয়া, খাওয়া-দাওয়ায় অনিহা এসব দেখার পর পেছনের কারণ বুঝতে পারেনা এমন মা পৃথিবীর কোথাও আছে বলে আমার মনে হয় না।
পরিবার আমার জন্য পাত্রী দেখতে লাগলো। আত্মীয়স্বজন, প্রতিবেশী, বন্ধুবান্ধব সবাই হতবাক এমন এলাহি কাণ্ডে। ফোনের পর ফোন, প্রশ্নের পর প্রশ্ন, জবাব দিয়ে কুল পাচ্ছিনা। ফেসবুকে একবন্ধু আমার ছবি দিয়ে ক্যাপশন দিছে “পাত্রী চাই”। ওখান অন্য এক বন্ধু কমেন্ট করেছে “গ্র‍্যান্ড মাস্তি গ্র‍্যান্ড মাস্তি প্যাঁ প্যাঁ প্যাঁ প্যাঁ প্যাঁ। আমাগো দোস্তর বিয়ে হইব, নতুন একটা ভাবি পাইব।”
শালা আছে গ্র‍্যান্ডমাস্তি আর ভাবি নিয়ে, আমি এদিকে মনির খানের গাণ শুনতে ব্যস্ত। এক পর্যায়ে বিরক্ত হয়ে মোবাইলটাও অফ করে দিয়েছি। রাস্তায় বেরোতে পারছিনা। সবাই বলাবলি করতে লাগলো। প্রতিবেশি এক ব্যাচেলর কাকাও যখন ঠাট্টা করে তখন আমার লজ্জা পাওয়ার কিছুই বাকি থাকেনা আর।
কিন্তু করবোটা কি! শাহানার বিরহের আগুনে আমার ভেতরটা দগ্ধ হচ্ছে দিনদিন। সেই দুঃখের কথা কাকে বুঝায়?
রাস্তায় যেতে না যেতেই দুই বন্ধুর সাথে দেখা,
:- দোস্ত! ঘটনা কি সত্যি?😜

ধ্যাত! শেষমেশ বাইরে বেরোনোটা ও অফ করে দিয়েছি। বিয়েটা না হওয়া পর্যন্ত একঘরে হয়েই থাকি ক’দিন। আবার ভাবছি চিরকুমার থেকে যাবো, এদের জ্বালা আর সহ্য হচ্ছেনা। এখন থেকে যেই অবস্থা শুরু করে দিয়েছে! না জানি বিয়ে যদি করেই ফেলি আরো কত কিছুর না সম্মুখীন হতে হয়।

হঠাৎ মা বললো, ‘পাত্রী আমাদের পছন্দ হয়েছে। তোকে দেখতে চাইলো, আমরা তোর ক’টা ছবি দিয়ে দিয়েছি। ওদেরও পছন্দ হয়েছে। বিয়ের তারিখ কবে দিবো?’
এখন আবার না করবো কিভাবে? মনে হচ্ছে এই মুহূর্তে না করতে গেলে তার প্রতিক্রিয়া ভালো হবে না। কিচ্ছু মাথায় আসছেনা আমার। যেহেতু পাত্রী ঠিক করে ফেলেছে সেহেতু মেনে নিতে বাধ্য হয়েছি।
দিন তারিখ ঠিক করার ব্যাপারটাও আমি স্বেচ্ছায় পরিবারের উপর ছেড়ে দিয়েছি।
এবার মা বিরক্ত হয়ে বললো; আশ্চর্য! বিয়ে করবি তুই, সংসার করবি তুই, সব আমদের ওপর ছেড়ে দিবি কেন?
আমি কোন উত্তর না দিয়ে মুখ ভার করে বসে রইলাম। মা আমাকে পাত্রীর ছবি দেখাতে চাইলো। আমি তাতেও আপত্তি জানিয়ে মা’কে ঝাড়ি দিয়ে বললাম ‘দরকার নেই দেখার। তোমরা যা করো তাতেই সন্তুষ্ট আমি’
মা আমার ঝাড়ি খেয়ে মন খারাপ করলো। চরম রাগ, বিষাদ, বিষণ্ণতা দেখে কিছু বলতেও পারছেনা আমাকে।
পরেরদিন ডেকে বললো, আগামী শুক্রবার বিয়ের তারিখ নির্ধারণ করেছি।
হিসেব করে দেখলাম আরো চারদিন বাকি। ক্যাম্নে কাটাবো এমন কষ্টের দিনগুলো? শাহানাকে ছাড়া আমার প্রতিটা মুহূর্তই যেন এক-একটা বছর। অসহ্য যন্ত্রণার এই সময়গুলো কখন ফুরাবে? জানিনা শাহানা কোথায় আছে? কি করছে? ভালো আছে কিনা? ঠিকমতো খাচ্ছে কিনা? এসব প্রশ্ন আর অতীতের স্মৃতি আমার কষ্টকে চরম পর্যায়ে নিয়ে গেছে। যাইহোক, আর চারটা দিন মাত্র। মনে হচ্ছে বিয়েটা করে ফেললে কিছুটা হলেও স্বস্তি পাবো। নতুন স্ত্রীর মায়া আমার কষ্টকে হালকা করে দিবে। আস্তে আস্তে হয়তো অতীত ভুলেই যাবো।
এরই মধ্যে বাড়ির সবাই আমার বিয়ের আয়োজনে ব্যস্ত। বিয়ের আমেজ ছড়িয়ে পড়েছে সারা বাড়ি জুড়ে। শুধু আমিই কেবল ফোন বন্ধ করে বাড়ির এককোণে বসে বিরহ যাপন করছি। ব্যপারটা এমন “যার বিয়ে তার খোঁজ নেই, পাড়াপড়শির ঘুম নেই।”
যাইহোক, অনেক কষ্টে অতিবাহিত হলো আমার চারটা দিন। আজ আমার বিয়ে। এবার স্বাভাবিক হওয়ার চেষ্টা করতেই হয়। অতীতে যা হয়েছে সবকিছু ভুলে নতুন জীবনে পদার্পণ করার প্রয়াসে।
দীর্ঘ এক সাপ্তাহ পর মোবাইল খুলেছি। ইনবক্সে ডুকতেই আমার হার্টবিট ১০০ পার সেকেন্ড।
শাহানা আমাকে এসএমএস করেছে “দ্যাখো বখতিয়ার! তোমার পরিবার থেকে বিয়ের প্রস্তাব করেছে আমায়। আমার ফ্যামিলি প্রথমে রাজি হয়নি। কিন্তু তোমার ফেমিলি একেবারে নাছোড়বান্দা। আমাকে ওদের লাগবেই। এমতাবস্থায় কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে তোমাকে অনেকবার চেষ্টা করেও ফোনে পাইনি। অবশেষে আমি তোমার হলাম।

লেখকঃ সংবাদকর্মী ও সাহিত্যানুরাগী
ইমেইল- sbbakhtiarkhan@gmail.com

পোস্টটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

প্রণয়, বিচ্ছেদ এবং পরিণয়

রিপোর্টার
  • পোস্ট করা হয়েছে রবিবার, ৬ নভেম্বর, ২০২২
  • ৪৫ বার পড়া হয়েছে

লেখকঃবখতিয়ার সালমান

বাসায় ফাইনালি জানিয়ে দিলাম ‘আমি বিয়ে করবো।’ সবাই তো অবাক! কোথায় স্টাব্লেশড, কোথায় কি? এভাবে আমাকে মেয়ে দিবে কোন্ হতভাগা? কিন্তু আমি নাছোড়বান্দা। কোনো অজুহাতই শুনবোনা আমি। যেভাবেই হোক বিয়ে আমাকে করাতেই হবে। এটা আমার ফাইনাল সিদ্ধান্ত। হঠাৎ এমন সিদ্ধান্তের কারণ জানতে চাইলো পরিবার। ইশারা ইঙ্গিতে এ ও জানতে চাইলো ‘আমার পছন্দের কেউ আছে কিনা, কিংবা কোন মেয়ে (প্রেমিকা) আমাকে এ সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য করলো কিনা।’ পরিবার, আত্মীয় স্বজন, বন্ধুবান্ধবের এমন ধারণাকে সম্পূর্ণ ভুল প্রমাণ করে আমি পরিষ্কার এটাও জানিয়ে দিয়েছি যে “পাত্রী আমি দেখবোনা। পারিবারের পছন্দই আমার পছন্দ। হোক সেটা চন্দ্রবর্ণ কিংবা কৃষ্ণবর্ণ। পাত্রী দেখার কোন ইচ্ছাই আমার নেই।”

মূলত আমার এ সিদ্ধান্তের পেছনে কারণ হলো ‘শাহানা’। আমার সদ্য ব্রেকাপ হওয়া প্রেমিকা।
যার সাথে চার বছরের রিলেশন ব্রেকাপের বিরহে কাতর আমি। ঠিক যেই মুহুর্তে শাহানার সাথে ব্রেকাপ হয় তখনই পাহাড়সম আবেগ মাথায় নিয়ে চোখের জল মুছতে মুছতে বলে দিয়েছি ওকে “দ্বিতীয় কারো সাথে রিলেশনে জড়াবোনা আমি। তুমিই আমার প্রথম, তুমিই শেষ। হয়তো তোমার কাছে আমি তা নয় এবং ছিলামনা। তবুও ভাল থেকো তুমি। অনেক শুভকামনা”।

একথা বলার পর নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে আমি বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নিই। মায়ের আচরণ দেখে মনে হচ্ছে, ‘মা আমার বিষণ্ণতার কারণ বুঝতে পেরেছে।’ কানে হেডফোন লাগিয়ে অলওয়েজ গান শুনা, কাজকর্মে পড়াশুনায় মন না দেওয়া, খাওয়া-দাওয়ায় অনিহা এসব দেখার পর পেছনের কারণ বুঝতে পারেনা এমন মা পৃথিবীর কোথাও আছে বলে আমার মনে হয় না।
পরিবার আমার জন্য পাত্রী দেখতে লাগলো। আত্মীয়স্বজন, প্রতিবেশী, বন্ধুবান্ধব সবাই হতবাক এমন এলাহি কাণ্ডে। ফোনের পর ফোন, প্রশ্নের পর প্রশ্ন, জবাব দিয়ে কুল পাচ্ছিনা। ফেসবুকে একবন্ধু আমার ছবি দিয়ে ক্যাপশন দিছে “পাত্রী চাই”। ওখান অন্য এক বন্ধু কমেন্ট করেছে “গ্র‍্যান্ড মাস্তি গ্র‍্যান্ড মাস্তি প্যাঁ প্যাঁ প্যাঁ প্যাঁ প্যাঁ। আমাগো দোস্তর বিয়ে হইব, নতুন একটা ভাবি পাইব।”
শালা আছে গ্র‍্যান্ডমাস্তি আর ভাবি নিয়ে, আমি এদিকে মনির খানের গাণ শুনতে ব্যস্ত। এক পর্যায়ে বিরক্ত হয়ে মোবাইলটাও অফ করে দিয়েছি। রাস্তায় বেরোতে পারছিনা। সবাই বলাবলি করতে লাগলো। প্রতিবেশি এক ব্যাচেলর কাকাও যখন ঠাট্টা করে তখন আমার লজ্জা পাওয়ার কিছুই বাকি থাকেনা আর।
কিন্তু করবোটা কি! শাহানার বিরহের আগুনে আমার ভেতরটা দগ্ধ হচ্ছে দিনদিন। সেই দুঃখের কথা কাকে বুঝায়?
রাস্তায় যেতে না যেতেই দুই বন্ধুর সাথে দেখা,
:- দোস্ত! ঘটনা কি সত্যি?😜

ধ্যাত! শেষমেশ বাইরে বেরোনোটা ও অফ করে দিয়েছি। বিয়েটা না হওয়া পর্যন্ত একঘরে হয়েই থাকি ক’দিন। আবার ভাবছি চিরকুমার থেকে যাবো, এদের জ্বালা আর সহ্য হচ্ছেনা। এখন থেকে যেই অবস্থা শুরু করে দিয়েছে! না জানি বিয়ে যদি করেই ফেলি আরো কত কিছুর না সম্মুখীন হতে হয়।

হঠাৎ মা বললো, ‘পাত্রী আমাদের পছন্দ হয়েছে। তোকে দেখতে চাইলো, আমরা তোর ক’টা ছবি দিয়ে দিয়েছি। ওদেরও পছন্দ হয়েছে। বিয়ের তারিখ কবে দিবো?’
এখন আবার না করবো কিভাবে? মনে হচ্ছে এই মুহূর্তে না করতে গেলে তার প্রতিক্রিয়া ভালো হবে না। কিচ্ছু মাথায় আসছেনা আমার। যেহেতু পাত্রী ঠিক করে ফেলেছে সেহেতু মেনে নিতে বাধ্য হয়েছি।
দিন তারিখ ঠিক করার ব্যাপারটাও আমি স্বেচ্ছায় পরিবারের উপর ছেড়ে দিয়েছি।
এবার মা বিরক্ত হয়ে বললো; আশ্চর্য! বিয়ে করবি তুই, সংসার করবি তুই, সব আমদের ওপর ছেড়ে দিবি কেন?
আমি কোন উত্তর না দিয়ে মুখ ভার করে বসে রইলাম। মা আমাকে পাত্রীর ছবি দেখাতে চাইলো। আমি তাতেও আপত্তি জানিয়ে মা’কে ঝাড়ি দিয়ে বললাম ‘দরকার নেই দেখার। তোমরা যা করো তাতেই সন্তুষ্ট আমি’
মা আমার ঝাড়ি খেয়ে মন খারাপ করলো। চরম রাগ, বিষাদ, বিষণ্ণতা দেখে কিছু বলতেও পারছেনা আমাকে।
পরেরদিন ডেকে বললো, আগামী শুক্রবার বিয়ের তারিখ নির্ধারণ করেছি।
হিসেব করে দেখলাম আরো চারদিন বাকি। ক্যাম্নে কাটাবো এমন কষ্টের দিনগুলো? শাহানাকে ছাড়া আমার প্রতিটা মুহূর্তই যেন এক-একটা বছর। অসহ্য যন্ত্রণার এই সময়গুলো কখন ফুরাবে? জানিনা শাহানা কোথায় আছে? কি করছে? ভালো আছে কিনা? ঠিকমতো খাচ্ছে কিনা? এসব প্রশ্ন আর অতীতের স্মৃতি আমার কষ্টকে চরম পর্যায়ে নিয়ে গেছে। যাইহোক, আর চারটা দিন মাত্র। মনে হচ্ছে বিয়েটা করে ফেললে কিছুটা হলেও স্বস্তি পাবো। নতুন স্ত্রীর মায়া আমার কষ্টকে হালকা করে দিবে। আস্তে আস্তে হয়তো অতীত ভুলেই যাবো।
এরই মধ্যে বাড়ির সবাই আমার বিয়ের আয়োজনে ব্যস্ত। বিয়ের আমেজ ছড়িয়ে পড়েছে সারা বাড়ি জুড়ে। শুধু আমিই কেবল ফোন বন্ধ করে বাড়ির এককোণে বসে বিরহ যাপন করছি। ব্যপারটা এমন “যার বিয়ে তার খোঁজ নেই, পাড়াপড়শির ঘুম নেই।”
যাইহোক, অনেক কষ্টে অতিবাহিত হলো আমার চারটা দিন। আজ আমার বিয়ে। এবার স্বাভাবিক হওয়ার চেষ্টা করতেই হয়। অতীতে যা হয়েছে সবকিছু ভুলে নতুন জীবনে পদার্পণ করার প্রয়াসে।
দীর্ঘ এক সাপ্তাহ পর মোবাইল খুলেছি। ইনবক্সে ডুকতেই আমার হার্টবিট ১০০ পার সেকেন্ড।
শাহানা আমাকে এসএমএস করেছে “দ্যাখো বখতিয়ার! তোমার পরিবার থেকে বিয়ের প্রস্তাব করেছে আমায়। আমার ফ্যামিলি প্রথমে রাজি হয়নি। কিন্তু তোমার ফেমিলি একেবারে নাছোড়বান্দা। আমাকে ওদের লাগবেই। এমতাবস্থায় কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে তোমাকে অনেকবার চেষ্টা করেও ফোনে পাইনি। অবশেষে আমি তোমার হলাম।

লেখকঃ সংবাদকর্মী ও সাহিত্যানুরাগী
ইমেইল- sbbakhtiarkhan@gmail.com

পোস্টটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরও সংবাদ

© All rights reserved © 2022
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: Popular IT Club
Popularitclub_NewsPortal