বিজ্ঞানের যুগে এসে, অনেক হস্ত শিল্পের কাজ প্রায় বিলুপ্তির পথে। তারপর এখনো পর্যন্ত বহাল তবিয়াতে কাজ করছে লোহার তৈয়ারী বিভিন্ন সরঞ্জামের কারিগর কর্মকার সম্প্রদায়। বর্তমান যুগে আধুনিকতার ছোঁয়ায় বিজ্ঞানের যুগে এসে বহু কিছুর পরিবর্তন হয়েছে। যেমন ঋষি সম্প্রদায়ের বাঁশ-কুনচি দিয়ে ঝুড়ি ডালা, কুলা, মুড়া, ডোল তারপর বেত দিয়ে ধামা, খুচি, চেয়ার-টেবিল ইত্যাদি। এসব সামগ্রী যদিও চোখে পড়ে। তার ভিতর কিছু কিছু বিলুপ্তি হয়ে প্লাষ্টিকের তৈয়ারী অনেক দ্রব্য বের হয়েছে। সেই সাথে কাঠ মিস্ত্রিদের একই অবস্থা কাঁঠের তৈয়ারী দরজা-জানালা, চেয়ার-টেবিল, আলমারী, সোকেস, খাট-পালং সহ বিভিন্ন দ্রব্যর বিপরিতে প্লাষ্টিকের তৈয়ারী আসবাপত্র বের হয়েছে। তেমনি কুমার (পাল) সম্প্রদায়ের তৈয়ারী সরঞ্জাম হাড়ি পাতিল বদনা নোংড়া গামলা জালো ভাড় ইত্যাদি এ সবের পরিবর্তে এ্যনোমেলিয়ান প্লাষ্টিকের বেশ কিছু সমগ্রী বের হয়েছে তাতে হাতে গড়া সরঞ্জামের চাহিদা খানিকটা কুমে গেছে । কিন্তু পরিবর্তন হয়নি, দীর্ঘ যুগের ঐতিহ্যবাহী লোহার তৈয়ারী বিভিন্ন দ্রব্য যা মানুষের নিত্য প্রযোজনে কাজে লাগে বিজ্ঞাণের যুগে এসে সব কিছু কিছুর পরিবর্তন হলেও এদের লোহার তৈয়ারী সরঞ্জামের বিপরিতে তেমন কিছু দেখা যায়নি। তাদের তৈয়ারী দা,কোদাল, খুনতা, হাসু, বটি, কাঁচি, যাতি, কোরন,পাশনী, ইত্যাদি যুগযুগ ধরে কর্মকারদের পূর্ব পুরুষ থেকে এ সব তৈয়ার করে আসছে। ওই সম্প্রদায়ের ভিতর থেকে অনেকে স্বলম্বী হয়ে স্বর্ণকারের কাজ বেঁচে নিলেও,পরিবারের কেউ না কেউ তাদের বাপ দাদা আমল থেকে বয়ে আসা জাত ব্যবসা ছাড়েনী। এখনো পর্যন্ত কর্মকার পাড়ায় ঢুকলে সেই আদি কালের নিয়মে বয়ে আসা যাতার ফোঁস ফোঁস ,হাতুড়ির ঠক ঠক শব্দে মুখরিত হয়ে ওঠে। ভোর না হতেই এরা কাজে বসে যায় যাতা হাতুড়ি নিয়ে। দিন ভর কয়লার আগুনের কাছে কি শীত কি গরম সব সময় লোহার সাথে লড়ায় করে যেতে হয়। এ বিজ্ঞাণের যুগে সব শ্রেনীর মানুষের প্রয়োজনীয় কাজের জন্য তাদের কাছে ধন্যা দিতে হয়ে থাকে। বিশেষ করে ধান কাটার জন্য কাচি, পাট কাটার সময় হাসুয়া, গাছ কাটার সময় গাছি দা তৈয়ারীর ধুম পড়ে যায়। এ সরঞ্জামের বিপরিতে কিছু তৈরি হতে দেখা যায়নী যে কারনে এদের চাহিদা কুমেনি। খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে এই কর্মজীবিরা অধিকাংশ পরিবারই স্বালম্বী। এদের কাজ কখনো তেমন একটা কমে না কিছু কিছু সময় তাদের কাজের প্রচুর ভিড় থাকে। কাজের জন অপেক্ষা করতে হয় খরিদারদের কারন এ পন্যের বিপক্ষে কিছু আবিষ্কার হতে দেখা যাইনি, মনিরামপুর উপজেলা ঘুরে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে প্রায় ২৪ টি গ্রামে কর্মকার সম্প্রাদায় লোকের বসবাস রয়েছে তার ভিতর পাঁচাকড়ি, হানুয়ার সংখ্যা বেশী রয়েছে, এদের ভিতর অধিকংশ পরিবার কর্মকারের কাজ করে স্বলম্বী। সরে জমিনে উপজেলার হানুয়ার কর্মকার পাড়ায় গেলে দেখা যায় প্রায় ৭০এর কাছা কাছি বয়সী নারায়ন কর্মকার নামে এক ব্যাক্তি এখনো পর্যন্ত হাতুড়ি পেটাচ্ছে মাঝে মাঝে যাতা টেনে লোহা পুড়িয়ে নরম করে নিচ্ছে শত ইস্ফুতির সাথে কাজ করে যাচ্ছে তিনি, কথা হয় হানুয়ার গ্রামের ভব কর্মকারের সাথে তিনি এ প্রতিনিধির সামনে দুঃখ করে বলেন সোনার বাংলায় কামার কুমারের কৃষান আর জেলেদের, সবাইকে মুল্যায়ন করলেও আমরা কর্মকার আমাদের কেহ মুল্যায়ন করে না আমরা অবহেলিত আমরা সরকারের কাছ থেকে তেমন কোন সুখ সুবিধা পাই না।