নিউজ ডেক্সঃ মণিরামপুর উপজেলা আওয়ামীলীগের দীর্ঘ সময়ের কান্ডারী প্রয়াত সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফার ৬ষ্ঠ শাহাদাৎ বার্ষিকী ছিলো ৬ ডিসেম্বর। প্রতি বছরের ন্যায় এবারও বরেণ্য রাজনীতিক মণিরামপুরের আপামর জনগনের প্রাণপ্রিয় এই নেতাকে অত্যান্ত শ্রদ্ধার সাথে মণিরামপুরবাসী স্মরণ করছে। মরহুমের শাহাদাৎ বার্ষিকী পালন উপলক্ষ্যে পারিবারিকভাবে ও দলীয়ভাবে কোরআনখানি,মিলাদ-দোয়া ও আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। কিন্তু প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে এ দিনে মণিরামপুর সকল কর্মসূচি স্থগিত রাখা হয়েছে বলে মরহুমের পারিবারিক সুত্রে জানানো হয়েছে।
জানা যায়, ৯০ দশকের পর থেকে মহান মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বদানকারী সংগঠন ঐতিহ্যবাহী বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের মণিরামপুর উপজেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদকের ন্যায় গুরুত্বপূর্ণ পদে আমৃত্যু সফলতার সাথে দাায়িত্ব পালন করেছেন মরহুম গোলাম মোস্তফা। আওয়ামীলীগের দুর্দিনে দলীয় নেতা-কর্মীদের তিনি আগলে রেখে দলকে সচল ও গতিশীল রেখেছিলেন। দীর্ঘ সময়ের পরীক্ষিত এই নেতা মণিরামপুরের আওয়ামী পরিবারের এক আস্থার প্রতিক ও একজন আস্থাভাজন অভিভাবক হিসেবে জায়গা করে নিয়েছিলেন। উপজেলার প্রত্যান্ত এলাকা থেকে শুরু করে সকল পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা তাদের মনের কথা বলার জন্য প্রিয় এই নেতার কাছে ছুটে আসতেন। আজ তার শুন্যতা, তার অভাব দলের প্রতিটি স্তরের নেতা-কর্মীরা তথা মণিরামপুরবাসি উপলব্ধি করতে পারছেন।
মরহুম গোলাম মোস্তফা পেশায় ছিলেন একজন দলিল লেখক। মণিরামপুর পৌর শহরের মোহনপুর গ্রামের ঐতিহ্যবাহী খালাসী পরিবারের সন্তান হিসেবে তিনি নিজের পৈত্রিক জমিতে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের মণিরামপুর উপজেলা শাখার অফিস নির্মান করে সেখানে বসে দলীয় কর্মকান্ড পরিচালনা করতেন। দলের পরীক্ষিত এই নেতা দল ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়েও কখনো নিজের দলিল লেখকের পেশা থেকে সরে যাননি। দলীল লেখকের পেশার আয়ের একটা বড় অংশ তিনি দলের নেতা-কর্মীদের চা-পানের আপ্যায়নে ব্যয় করতেন। তিনি দলীয় অফিসে সারাক্ষণ বসে নেতা-কর্মীদের সাথে আড্ডা বসাতেন পাশাপাশি তাদের সুখ-দুঃখের কথা,দলীয় কর্মকান্ডের কথা মনোযোগ দিয়ে শুনতেন এবং সাধ্যমত সহযোগিতা করতেন। তাইতো তিনি সাধারণ নেতা-কর্মীদের কাছে একটা আস্থার জায়গা হিসেবে স্বীকৃতি পেয়ে ছিলেন। আজ তিনি নেই ! তার উত্তরসুরী সাধারণ সম্পাদকের পদে আসীন হয়েছেন। কিছুটা শুন্যতা পূরণ হয়েছে বটে। কিন্তু মরহুম গোলাম মোস্তফা শুণ্যতা আজও রয়ে গেছে। মরহুমের একান্ত সহচর উপজেলার হালসা গ্রামের মরহুম রওশন আলীর পরিবার সুত্রে জানা গেছে, প্রয়াত উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক গোলাম মোস্তফা প্রায়ই প্রাতঃ ভ্রমনের অংশ হিসেবে উপজেলার বিভিন্ন এলাকার প্রবীণ নেতা-কর্মীদের বাড়ীতে যেয়ে খোঁজখবর নিতেন। প্রতি শুক্রবার তিনি হালসা গ্রামের আওয়ামীলীগ নেতা প্রয়াত রওশন আলীর বাড়ীতে যেয়ে খোঁজ খবর নিতেন। এ ভাবে অসংখ্য নেতা-কর্মীর কাছে এক আস্থার প্রতিক হিসেবে ঠাঁই পেয়েছিলেন বর্ষিয়ান রাজনীতিক গোলাম মোস্তফা। তাইতো প্রতিবছর তাঁর মৃত্যু বার্ষিকীতে অনেক ভক্তজনেরা আজও কাঁদে। কায়মনোবাক্যে মহান আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ করে তাঁর রুহের মাগফিরাত কামনায়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকেই মরহুম গোলাম মোস্তফার মগফিরাত কামনা করে স্টাটাস দিয়েছেন। বহু গুনগ্রাহী প্রার্থনা করেছেন।